শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
বিএসএফের গুলিতে আহত তরুণের মৃত্যু

বিএসএফের গুলিতে আহত তরুণের মৃত্যু

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)র গুলিতে আহত বাংলাদেশী তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলা শহরের একটি হাসপাতালে বিএসএফের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর খবর শুনে তাঁর স্বজনেরা আহাজারি করছেন।

 

মারা যাওয়া তরুণের নাম লিটন মিয়া (১৯)। তিনি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দীঘলটারী গ্রামের শানকারচড়া মহল্লার মোকছেদুল হক ও দুলালী খাতুন দম্পতির পুত্র। সোমবার (২৫ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্গাপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে তিনি আহত হয়েছিলেন।

 

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী তরুণ লিটন মিয়া আহত হওয়ার পর লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি)র লেঃ কর্ণেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ পিএসসি কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফের কাছে চিঠি দেন। বুধবার (২৭ মার্চ) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি-৭৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের বরাত দিয়ে লেঃ কর্ণেল মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ পিএসসি বলেন, লিটন মিয়ার লাশ ময়না তদন্ত শেষে আজ সন্ধ্যার পর যেকোনো সময় বিএসএফের পক্ষ থেকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হবে।

 

বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে লিটন মিয়াদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়।

 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে লিটনের মা দুলালী খাতুন বলেন, মোর ছাওয়াটা সীমান্তে জায়া কোনো দোষ করি থাকলে তাক ধরি ভারতের জেলোত না দিয়া বিএসএফ এদোন করি গুলি করি মারি ফেলাইল! ইয়ার (এর) বিচার চাই, ক্ষতিপূরণ চাই।

 

লিটনের খালা আদুরী খাতুন বলেন, গণমাধ্যমে খবর শুনে বোনের বাড়িতে তিনি ঢাকা থেকে এসেছেন। বোনকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোনো ভাষা নেই।

 

শোকার্ত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সোমবার (২৫ মার্চ) রাতের খাবার খেয়ে লিটন রাত ৯টার দিকে এক বন্ধুর সঙ্গে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান। সেই রাতে আর ফিরে আসেননি। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে জানা যায়, লিটন মিয়া বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের কুচবিহারে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরে তাঁরা মৃত্যুর খবর পান।

 

লিটন মিয়া অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন। তিনি পাওয়ার টিলার চালাতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন কাজ করতেন।

 

লিটন মিয়ার চাচা মোঃ শাহীন বলেন, লিটনের এভাবে মৃত্যু হওয়ায় পরিবারটির অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। এখন যদি বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দিত, তাহলে পরিবারটির উপকার হতো।

 

লিটন মিয়ার ছোট বোন মীম আক্তার (১২) স্থানীয় সাবেরা খাতুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী এবং ছোট ভাই লিমন মিয়া (১৪) দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে তারাও কাঁদছিল। আর ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে বাবা মোকছেদুল হক বাক্‌রুদ্ধ হয়ে গেছেন। কোনো কথা বলছেন না। কিছুক্ষণ পরপর মূর্ছা যাচ্ছিলেন, আর শুধু চোখের পানি মুছছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone